আসসালামু আলাইকুম..!
আজ আমি আপনাদেরকে যা শোনাবো সেটা হচ্ছে একটা ভ্রমণ কাহিনী।
ভ্রমরটা কয়েক মাস আগে করেছিলাম। তখন শিতকাল শেষের দিকে ছিল।
সকালটা ছিল বেশ চাকচিক্যময়, খুব সুন্দর সূর্যের সুন্দর আলোয় আলোকিত ছিল চারপাশ। ঐদিন খুব সকাল সকাল আমি আমার এক বন্ধুকে কল করে বলেছিলাম যে আজ আমরা দুজন দূরে কোথাও ঘুরতে যাব। আমার বন্ধু রুবেল ও আমার কথায় সাড়া দিল এবং সেও খুব সকাল সকাল বাড়ি থেকে বের হলো। বন্ধু রুবেলের বাড়ি আমার বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। আমি মোটর বাইক নিয়ে বের হয়ে ওদের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম এমন সময় সারা আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গেল। মনে হচ্ছিলো এখনই খুব জোরে বৃষ্টি নামবে। ওদের এলাকায় যাওয়ার পর ও সহ একসাথে দুজনে হোটেলে বসে নাস্তা করে নিলাম। কিছুক্ষণ পরেই দেখতে পেলাম আকাশের কালো মেঘ কেটে গিয়ে আবারও সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়ে গেল চারপাশ। হোটেলে বসেই আমরা দুজন সিদ্ধান্ত নিলাম কোথায় কোথায় আজ ঘুরাঘুরি করা যায়? আমি বললাম তাহলে বাংলা বাজারের দিকে যাওয়া যাক! রুবেল বলল ওকে বাংলাবাজার গিয়ে, বাংলাবাজার দিয়ে ঘুরে আমরা মুছাপুর পৌঁছাব! তারপর সোনাগাজী দাশেরহাট উঠবো সেখানে বিখ্যাত সিঙ্গারা ও আঙ্গুলি পাওয়া যায় সেগুলো খেয়ে আমরা মুহুরী প্রজেক্ট এর উদ্দেশ্যে রওনা দেবো। আমি বললাম ঠিক আছে তবে মুহুরী প্রজেক্ট যখন যাব সেখান থেকে মিরসরাই গিয়ে আমরা সেখানে দই চিড়া খাবো, তারপর কিছুক্ষণ সেখানে আড্ডা দিয়ে আবার মুহুরী প্রজেক্ট চলে আসব। তখন বন্ধু রুবেল আমার সাথে একমত হয়ে, হোটেল থেকে বেরিয়ে পরলো। তখন সময় ছিল প্রায় 8:30 এর মত!
আগেই বলে রাখি, বন্ধু রুবেলের বাড়ি ফেনী জেলার ফেনী সদর উপজেলার বালুয়া চৌমুহনীতে অবস্থিত।
বন্ধুর রুবেলের ছবি।
গাড়িতে বসে থাকার লোকটি বন্ধু রুবেল।
আর আমি আবেদ, আমার বাড়ি ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার মতিগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত।
আমার ছবি।
দুজন চৌমুনী থেকে একাত্রে, প্রথমে সোনাগাজীর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ২০ মিনিটের মধ্যেই আমরা সোনাগাজী পৌঁছে গেলাম। সোনাগাজী থেকেই সর্বপ্রথম আমরা বাংলা পথের দিকে রওনা দিলাম বাংলা বাজার সোনাগাছি থেকে ৯ কিলোমিটার পশ্চিমে। সেখানে একটা নদী আছে, যে নদীটি সোনাগাজী ও বাংলাবাজারের যোগাযোগ পথ আলাদা করে রেখেছিলো। বর্তমানে সেখানে বিশাল একটা ব্রিজ এর মাধ্যমে সোনাগাজী ও বাংলা পাচারের যাতায়াত পথ সহজ করা হয় । ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ব্রিজটি শুভ উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ব্রিজ নাম দেয়া হয়, ফেনী ছোট নদী ব্রিজ আমরা 9:30 এর মধ্যেই ব্রিজের উপর পৌঁছে যাই এবং সেখানে কিছু ছবি তুলি ছবি তুলি।
ব্রিজের উপর কিছু ছবি তুললাম কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরির পর আমরা চলে গেলাম বাংলাবাজার সেখানেই একটা মিষ্টির দোকানে ঢুকলাম।
এরপর আশপাশে ঘুরাঘুরি করি এদিক সেদিক এদিক-সেদিক ঘুরে ঘুরে 11 টার দিকে রওয়ানা দেই মুসাপুরের দিকে। বারোটার আগেই আমরা মুসাপুর পৌঁছে যাই। মুসাপুর পৌছেই আমরা প্রথমে ঢুকে পড়ি ঝাউবাগানে,
তারপর কিছুক্ষণ নদীর পাড়ে আড্ডা দেই। 01:00 আগে আগেই আমরা আবার মুসাপুর থেকে মুহুরী প্রজেক্ট এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। যখন আমরা মুহুরী প্রজেক্ট পৌঁছাই তখন সময় প্রায় 02:00 বাজে। মুহুরী প্রজেক্ট প্রজেক্ট দুপুরের খাওয়াটা শেষ করি। তারপর মুহুরি প্রজেক্টে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করার পর আমরা মিরসরাইয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই সেখানে যেতে আমাদের সময় লাগে প্রায় ৩০ মিনিট। আমরা যখন মিরস্বরাই পৌঁছাই তখন প্রায় 04:00 বাজে। সেখানে দুজনে মিলে দই-চিরা খেয়ে আবার মুহুরী প্রজেক্টে চলে আসি। কিছুক্ষণ পরে চারদিকে সন্ধ্যা নেমে আসে। আর আমরাও সোনাগাজীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিই। সোনাগাজী এসে বন্ধু রুবেলকে গাড়ীতে তুলে দিয়ে বিদায় জানালাম, তারপর আমি আমার নিজ গন্তব্যে চলে গেলাম।